রাজধানীর হাজারীবাগে সাইকেল চোরকে ধাওয়া করতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছে ১৭ বছর বয়সী কিশোর সাহাদাত হোসেন শান্ত। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ শুকুর আলী (২২), সিয়াম (২০), এবং শাকিল হোসেন (২৩) নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে হাজারীবাগ থানা পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে। তাদের হেফাজত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো ছুরি জব্দ করা হয়েছে।
কীভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক ঘটনা?
গত বৃহস্পতিবার রাতে মনেশ্বর লেনের একটি বাসায় বাইসাইকেল চুরি করতে প্রবেশ করে সিয়াম। সিসিটিভি মনিটরে চুরির দৃশ্য দেখে বাড়ির মালিক চিৎকার শুরু করলে শান্ত ও তার বন্ধুরা ছুটে আসেন। চোর সিয়াম দৌড়ে পালিয়ে শুকুর আলীর বাসায় আশ্রয় নেয়।
চোরকে ধরতে শান্ত ও তার বন্ধুরা ওই বাসায় প্রবেশ করলে সিয়াম, শুকুর, এবং শাকিল মিলে তাদের ওপর হামলা চালায়। শুকুর আলী ধারালো ছুরি দিয়ে শান্তকে গুরুতর আঘাত করে, ফলে শান্ত মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। তার বন্ধুরা সাহায্য করতে গেলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করা হয়।
বাঁচানোর চেষ্টা ব্যর্থ, শেষ হলো প্রাণ
শান্তকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মা’র অভিযোগ ও পুলিশের পদক্ষেপ
শান্তর মা শান্তা ইসলাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশের চৌকস টিম প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।
তরুণ প্রাণ ঝরে গেল দায়িত্ববোধে
সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে শান্ত এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল, কিন্তু তার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হলো না। এই মর্মান্তিক ঘটনা সমাজে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
শেষ কথা
একটি চুরির ঘটনা প্রতিরোধ করতে গিয়ে একটি তরুণ প্রাণ অকালে ঝরে পড়লো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিলেও, এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ আরও জরুরি।