হজযাত্রীদের রিফান্ডের টাকা ফেরত দেওয়ার নামে প্রতারণার নতুন কৌশল নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসাধু চক্র। এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতারকেরা হাজীদের কাছ থেকে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, বিকাশ বা নগদের গোপন নম্বর হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এসব তথ্য শেয়ার করার মাধ্যমে অনেকেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
প্রতারণার কৌশল: কীভাবে সক্রিয় প্রতারকেরা?
প্রতারকেরা সাধারণত ফোন কল, মেসেজ বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করে। তারা পরিচয় দেয় হজ কার্যালয় বা সরকারি কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে। এরপর রিফান্ডের টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে গোপন তথ্য চেয়ে নেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের প্রতারণার লক্ষ্য হলো হাজীদের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, প্রতারকেরা হাজীদের সঠিক পরিচয় ও রিফান্ড সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে অবগত থাকে, যা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার আড়ালে প্রতারণার সুযোগ করে দেয়।
সতর্কতা: ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা
ধর্ম মন্ত্রণালয় কিছু জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে, যা প্রতারণা থেকে সুরক্ষা পেতে সাহায্য করবে:
- গোপন তথ্য গোপন রাখুন: ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের পিন নম্বর এবং বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্টের গোপন তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
- অজানা লিঙ্ক বা কল এড়িয়ে চলুন: অজানা নম্বর থেকে আসা ফোন বা মেসেজে দেওয়া কোনো লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
- সন্দেহজনক যোগাযোগ সম্পর্কে রিপোর্ট করুন: কেউ যদি রিফান্ডের কথা বলে আপনার কাছে ব্যক্তিগত তথ্য চায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন বা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দিন।
হজযাত্রীদের সরলতার সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকেরা
হাজীরা সাধারণত ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আন্তরিক এবং সহজ-সরল মনোভাবাপন্ন থাকেন। এই সরলতাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে প্রতারকেরা। তারা বিশ্বাস করায় যে, টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া সহজ করতে গোপন তথ্য প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতারণার এই ধরনটি নতুন নয়, তবে এটি দিন দিন আরও আধুনিক ও সংগঠিত হয়ে উঠছে। একাধিক হজযাত্রী ইতোমধ্যে প্রতারিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রতিরোধে প্রযুক্তির ব্যবহার
প্রতারণা রোধে ধর্ম মন্ত্রণালয় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে। হাজীদের রিফান্ড সংক্রান্ত তথ্য সরাসরি এসএমএস বা একটি সুরক্ষিত অ্যাপের মাধ্যমে প্রদান করা হলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
এছাড়া, রিফান্ড প্রক্রিয়া সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বা সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত করা গেলে প্রতারকদের সুযোগ সীমিত হবে।
উপসংহার: সচেতন থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন
প্রতারণা রোধে সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হজের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ধরনের প্রতারণা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে এবং তথ্য গোপন রেখে নিজেকে ও অন্যদের সুরক্ষিত রাখা জরুরি।
হাজীদের প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বার্তা একটাই: “যে কোনো সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে দ্রুত যোগাযোগ করুন, গোপন তথ্য কখনোই শেয়ার করবেন না।”