মাওলানা সাদের অনুসারীরা কাকরাইল মারকাজ মসজিদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণসহ ৭ দফা দাবি পেশ করেছেন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে, ‘দাওয়াত ও তাবলিগের ওলামায়ে কেরাম এবং সাথীগণ’-এর ব্যানারে তাঁরা এসব দাবি জানান। মাওলানা জোবায়েরপন্থীদের ‘মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র’ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তাঁরা এই দাবিগুলো উত্থাপন করেন।
মূল দাবি: কাকরাইল মারকাজ এবং টঙ্গী ইজতেমায় নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, দেশের তাবলিগ কার্যক্রমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা, এবং এ বিষয়ে কোনো পক্ষ যেন উসকানিমূলক বা সহিংস আচরণ না করে – এমনটাই ছিল সাদপন্থীদের মূল দাবি। কাকরাইল মারকাজ মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মাদ আযীমুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, “সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে কাকরাইল মারকাজে তাবলিগের মূলধারার সাথীরা আমাল শুরু করবে। কিন্তু ‘জোবায়েরপন্থীরা’ কাকরাইল মারকাজ নিজেদের দখলে রাখার মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জোবায়েরপন্থীরা সরকারের নিয়ম ভেঙে ‘মিথ্যা’ প্রচারণা চালাচ্ছে এবং সাধারণ তাবলিগ সাথী ও মাদরাসা ছাত্রদের উসকানি দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। আযীমুদ্দীন বলেন, “কাকরাইল মসজিদ একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হলেও এটি আসলে বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দীনের বাংলাদেশ শাখা, এবং একে অন্য কোনো দল দখল করতে পারে না।”
৭ দফা দাবি: সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা সাদের অনুসারীদের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়:
- সহিংসতা পরিহার: তাবলিগের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে সহিংসতা ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বন্ধ করে উভয় পক্ষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
- কাকরাইল মসজিদে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ: কাকরাইল মারকাজ সম্পূর্ণভাবে নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।
- টঙ্গী ইজতেমার প্রাধান্য: প্রথম পর্বে টঙ্গী ইজতেমায় নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
- বিশ্ব আমিরের উপস্থিতি: বিশ্ব ইজতেমার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে মাওলানা সাদ সাহেবের ইজতিমায় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
- শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম: দেশের সব মসজিদে তাবলিগের উভয়পক্ষের শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে দিতে হবে।
- স্থায়ী বন্দোবস্ত: উভয়পক্ষের জন্য একটি স্থায়ীভাবে মারকাজ পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
- মাদরাসা ছাত্রদের ব্যবহার নিষিদ্ধ: তাবলিগের ইস্যু নিয়ে মাদরাসার ছাত্রদের সহিংসতায় ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
মুফতি আযীমুদ্দীন জোর দিয়ে বলেন, “তাবলিগ জামাতের মূলধারা কাকরাইল মারকাজ পরিচালনার জন্য দায়বদ্ধ, এবং এই অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার ও জনগণের কাছে তাঁদের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।”