ডেস্ক নিউজ: সরকারের সিদ্ধান্তে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ আওতায় দেশের ৬২টি জেলায় সেনাবাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে সেনাসদরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীর সেনানিবাস সংলগ্ন স্টাফ রোডের মেসে এক সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে সেনাবাহিনী। তার মতে, অস্ত্র উদ্ধার, নাশকতা প্রতিরোধ এবং শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে, দেশের গার্মেন্টস শিল্পে কাজের পরিবেশ সুরক্ষায় সেনাবাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে অধিকাংশ কারখানা বর্তমানে সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
ইন্তেখাব হায়দার খান জানান, দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন বিক্ষোভ ও আন্দোলনের মধ্যেও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ৬০০টির বেশি ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শিল্প খাতে শান্তি ও উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে সরকার, বিজিএমইএ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে ২ হাজার ৮৯টি গার্মেন্টস কারখানা সচল রয়েছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনী ৭০০-এর বেশি অশান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে, যার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সংঘর্ষসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত।
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানেও সেনাবাহিনী ভূমিকা পালন করছে। মাদকদ্রব্য ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের গ্রেপ্তার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী কার্যকরী ভূমিকা রাখছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া সেনাবাহিনী মানবাধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ সচেতন রয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড না ঘটানোর জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপর কড়া নির্দেশ রয়েছে বলে জানান কর্নেল ইন্তেখাব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার বিষয়টিও সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি আন্দোলনকারীর চিকিৎসা সিএমএইচে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৩ জন।
এই দায়িত্ব পালনের মেয়াদ কতদিন হবে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করা হবে এবং সময়সীমা নির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।