গণআন্দোলনে আহত ও চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা যথাযথ চিকিৎসা ও বরাদ্দকৃত অর্থ পাওয়ার দাবিতে বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন। দুপুর সোয়া ১টায় আগারগাঁও থেকে শ্যামলীমুখী সড়কে অবস্থান নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন দাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা এই সময় অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য সব যান চলাচল বন্ধ করে দেন, যা ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গণআন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া সত্ত্বেও তারা প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন না। বরাদ্দকৃত অর্থ থেকেও তাঁরা বঞ্চিত বলে অভিযোগ করেন। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হাসপাতালে এক ওয়ার্ডে ৪৮ জন আহত শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। তবে তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসার মান অত্যন্ত নিম্ন এবং তাঁরা প্রয়োজনীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, “আমাদের পছন্দের পাঁচজন বিদেশি সাংবাদিক আনা হলেও দেশের সাংবাদিকদের হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিদেশি সাংবাদিকরা শুধু দু-একজনের সঙ্গে কথা বলেই চলে গেছেন, আর আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “তিন মাস ধরে আমাদের সামান্য চিকিৎসা দিয়ে এখানে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমার পায়ে নয়টি অপারেশন করা হয়েছে, কিন্তু এখনো পুরোপুরি সুস্থ নই। বরাদ্দকৃত সেই এক লাখ টাকা ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা দাবিই আমাদের এই বিক্ষোভের কারণ।”
অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, “যথাযথ সেবার অভাবে আমাদের অনেকের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। আমরা চাই বিদেশি সাংবাদিকরা আমাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন এবং দ্রুত কর্তৃপক্ষ আমাদের এই সংকট সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।”
উল্লেখ্য, এই বিক্ষোভের আগে সকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক নিটোর পরিদর্শনে আসেন। তাঁদের এই পরিদর্শনের পরই শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য বিক্ষোভে অংশ নেন, যা হাসপাতালে চলমান চিকিৎসা ও অবহেলার বিরুদ্ধে তাদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষকে প্রতিফলিত করে।