ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রাপ্ত জনসমর্থন এবং জনগণের ভালোবাসা ধরে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের আয়োজনে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইশরাক হোসেন বলেন, “মেয়র হিসেবে চেয়ারে বসা আমার কাছে মুখ্য নয়; আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো ঢাকাবাসীর কল্যাণে কাজ করার সুযোগ পাওয়া এবং তাদের আস্থা ধরে রাখা। ঢাকাকে বাসযোগ্য একটি শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমি সর্বাত্মক প্রয়াস চালাতে চাই।”
স্মরণসভায় ইশরাক হোসেন বলেন, “ঢাকা শহরের সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে দক্ষ সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়। আমার বাবার কাছ থেকেই জেনেছি, ঢাকার উন্নয়নে সমন্বয়ের অভাব একটি বড় বাধা। ৭টি মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত ৫০টির অধিক দপ্তরের মধ্যে অসংগতি থাকায় নগর ব্যবস্থাপনায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটেনি। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ সমন্বয়হীনতা দূর করার পাশাপাশি কর্মকর্তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন নিশ্চিত করা হবে।”
ইশরাক আরো বলেন, “গত নির্বাচনে সাধারণ মানুষ যে ভালোবাসা ও আস্থা দেখিয়েছেন, সেটাই আমার জন্য রাজনীতির সবচেয়ে বড় শক্তি। আমরা এক দুর্নীতিমুক্ত, আধুনিক ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে চাই। আমার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় দেখেছি, জনগণের সেবা করা এবং তাদের আস্থা অর্জন করাই আসল কাজ। আগামীতে সুযোগ পেলে ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা পূরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবো।”
স্মরণসভায় ইশরাক হোসেনের বক্তব্যে আরও উঠে আসে ঢাকার জলাবদ্ধতার সমস্যার বিষয়টি। তিনি বলেন, “ঢাকা ওয়াসা সিটি করপোরেশনকে সাতটি খাল হস্তান্তর করেছে। কিন্তু খাল সংস্কারের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের একটি বড় অংশ অপচয় হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের ৯০০ কোটি টাকার বাজেট থেকে মাত্র ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, তবে এসব উদ্যোগ নগরীর সমস্যা সমাধানে খুব বেশি কাজে আসেনি।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় গেলে ঢাকার উন্নয়নে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কর্মপরিবেশ উন্নত করার পাশাপাশি তাদের যোগ্যতানুযায়ী দায়িত্ব পালনের সুযোগও দেওয়া হবে। দেশের প্রতিটি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমাদের নেতা তারেক রহমান কাজ করে যাচ্ছেন।”
এই স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম। প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর মোহাম্মদ ইলিয়াস এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্স।
ইশরাক হোসেন তাঁর বক্তব্যে ঢাকার সাধারণ মানুষের জন্য সেবা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, ঢাকাবাসীর ভালোবাসা ও আস্থা ধরে রাখাই আমাদের প্রধান কাজ। ঢাকাকে একটি আধুনিক, নিরাপদ, ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”